ভুটানের বিপক্ষে জয়েই চোখ জামালের
ভুটানের বিপক্ষে ৫ ও ৮ সেপ্টেম্বরের দুটি প্রীতি ম্যাচ সামনে রেখে সোমবার থেকে ক্যাম্প শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। ক্যাম্পে যোগ দিতে এসে এবারের মৌসুমে কোনো দল না পাওয়া জামাল ভূইয়া অনেক ইস্যু তুলে ধরলেন। ভুটান ম্যাচের লক্ষ্য, বাংলাদেশের জার্সিতে ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা চৌধুরীর খেলার সম্ভাবনা নিয়ে চলতে থাকা গুঞ্জন, ক্ষমতার পালাবদলে ফুটবল নিয়ে আগামী দিনের চাওয়াসহ আরো অনেক কথাই বললেন এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।ভুটানের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে ঢাকায় তিন দিনের মতো অনুশীলনের সুযোগ পাবে দল। তবে খেলোয়াড়দের আগে থেকে নিয়মের ‘ফর্দ’ ধরিয়ে দিয়েছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। সেখানে খাওয়া, ঘুম, প্রস্তুতি নিয়ে ছিল নির্দেশনা। জামালও বললেন, মৌসুমের বিরতির তিন মাসে সারাক্ষণ কোচের নজরদারিতে ছিলেন তারা। ‘ভ্যাকেশন সবসময় ভালো লাগে। এবার একটু বেশি লম্বা ছিল। মাঝখানে অনেক কিছু হয়েছে দেশের মধ্যে। কোচ সবাইকে একটা প্রোগ্রাম দিয়েছিলেন, যে অনুসরণ না করবে, তাকে বাদ দিবে। কোচ খুবই কড়া। প্রায় প্রতিদিনই জিজ্ঞেস করে, কী করেছ, কী খেয়েছ, রানিং করছ? প্রমাণ পাঠাতে হবে, এসব নিয়ে আমরা ব্যস্ত ছিলাম। তিন মাস হয়ে গেছে শেষ ম্যাচ খেলেছি। ক্যাম্পের শুরুতে হয়ত ছন্দ একটু কম থাকবে। কিন্তু দলে প্রায় একই খেলোয়াড়, আমরা প্রায় দুই বছর একসঙ্গে আছি। তবে তিন মাসের বিরতি, তাই আমি মনে করি, শুরুতে একটু সমস্যা হবে। তবে আমরা সবাই একসঙ্গে লম্বা সময় কাটিয়েছি, তো সমস্যা নেই।’ভুটানের বিপক্ষের দুই ম্যাচ নিয়ে প্রত্যাশাও পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন জামাল। ক্ষমতার পালাবদলের পর বিভিন্ন ফুটবল সমর্থকগোষ্ঠী ও সাবেকদের তোপের মুখে থাকা বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে ক্যাম্প নিয়ে কোনো আলোচনা এবার হয়নি বলেও জানালেন অধিনায়ক। আমি মনে করি, ভুটানের চেয়ে আমার দল ভালো। অবশ্যই যেকোনো দলের বিপক্ষে কিন্তু ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুটানের সঙ্গে খেলতে হবে, আমাদেরও এ চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। দুটি ম্যাচ জিততে চাই। ৬ পয়েন্ট নিতে চাই। তাহলে র্যাঙ্কিংয়ে ভালো হবে। ভুটানে চ্যালেঞ্জ হবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা। টার্ফে মনে হয় খেলা। তবে আমরা এগুলো ওভারকাম করতে পারি। ‘এবার সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করিনি। দেশে অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে। তবে আশা করি সভাপতি ক্যাম্পে আসবেন, তখন আলোচনা করব।’ ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও খোঁজখবর পেতেন বলে জানালেন জামাল। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও তিনি বার্তা দিয়েছেন। দেশের ফুটবলকে এখন নতুন উচ্চতায় দেখতে চান জামাল।‘আমি আসলে যখন এটা (আন্দোলন) শুরু হয়েছে, তখন জার্মানি ছিলাম। ইউরোয় আমার কাজ ছিল। ওটা কাভার করেছি। আমার কাজিন যারা বাংলাদেশে থাকে, ওরা আমাকে বলছে, তুমি কিছু বল না কেন? আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে? ওরা বলল, অনেক মারামারি চলছে, ডেমোনেস্ট্রেশন চলছে। তারপর আমি মনে করেছি, এটা ছাত্ররা করছে (তাদের ব্যাপার)- এরপর কাজিনরা আমাকে আবারও বলেছে। এরপর আমি বিষয়গুলো শুনলাম। আমার কাজিনের বন্ধু মারা গেছে, তারপর আমি কথা বলেছি। (ফুটবলকে) অনেক ভালো একটা জায়গায় দেখতে চাই। আমি জানি, ফুটবলটা একটু নিচে নেমে গেছে। আশা করি, এ বছর না, সামনের বছর আবার ওপরে উঠবে। আমি চাই, ফুটবল সবসময় এক নম্বর অন্য খেলা ঠিক আছে… ক্রিকেট, আর্চারি আছে, কিন্তু আমি চাই, ফুটবল ১ নম্বর খেলা হোক।’সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা উত্তরসূরিদের শুভকামনা জানাতেও ভোলেননি জামাল। আজ বুধবার শিরোপা লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ‘ইনশাল্লাহ ফাইনালে জিতবে। অনূর্ধ্ব-২০ দল দেখলাম, খুবই শক্তিশালী দল। সবাই তো মনে হয় বিপিএলে খেলছে। আমি মনে করি, ওদের (জয়ের) ভালো সুযোগ আছে।’ বেশ কিছুদিন ধরে চলা গুঞ্জনে নতুন হাওয়া লেগেছে সম্প্রতি হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়ায়। ইংল্যান্ডপ্রবাসী এ ডিফেন্সিভ ফুটবলারের গায়ে লাল-সবুজের জার্সি তুলে দেওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। জামাল অবশ্য হামজা ইস্যুতে বলেননি বেশি কিছু। গত দুই বছর ধরে শুনছি। ওর (হামজার) সঙ্গে কখনো কথা হয়নি, তবে আমার এক সাবেক সতীর্থ উনার সঙ্গে একই দলে খেলে।’