ইসলাম

আজমিরের আড়হাই দিনকা ঝোপড়া মসজিদ

 

হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী আজমিরের আড়হাই দিনকা ঝোপড়া মসজিদ। দিল্লি থেকে ৪৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে রাজপুতনার আজমিরের তারাগধ পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দে কুতুব উদ্দিন আইবেক এটি নির্মাণ করেন।

মসজিদটি ‘আড়াই দিনের ঝুপড়ি’ নামে পরিচিত।

এটি মূলত ‘আড়হাই দিনকা ঝোপড়া’র অনুবাদ। অনেকের ধারণা, মসজিদটি নির্মাণে আড়াই দিন সময় লেগেছে। ফলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘আড়হাই দিনকা ঝোপড়া’ মসজিদ। আবার অনেকের মতে প্রাচীনকাল থেকে এখানে একটি মেলা বসত, যা আড়াই দিন স্থায়ী হতো। তাই এই নাম দেওয়া হয়েছে।

আয়তনের দিক থেকে এই মসজিদটি কুওয়াতুল ইসলাম মসজিদের আয়তনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। এর দৈর্ঘ্য ২৭২ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ২৬৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর নির্মাণকাজে পীতাভ বেলে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদ স্থাপত্যের চিরাচরিত পরিকল্পনা অনুযায়ী এ মসজিদের পশ্চিমাংশে রয়েছে নামাজঘর। মসজিদের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের তিন দিকে রয়েছে তিন আইলবিশিষ্ট রিওয়াক। নামাজঘরের দৈর্ঘ্য ২৪৮ ফুট ৩ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৪০ ফুট ৭ ইঞ্চি। নামাজঘরটি চারটি আইলে বিভক্ত। এর মধ্যবর্তী স্থানে পশ্চিম দিকের প্রাচীরে সাদা মার্বেল পাথরের একটি অবতল মিহরাব রয়েছে। বিপুলসংখ্যক স্তম্ভের সমাহারে ওই মসজিদের নামাজগৃহ একটি বিরাট কক্ষে পরিণত হয়েছে। স্তম্ভগুলো কুওয়াতুল ইসলাম মসজিদের স্তম্ভগুলোর চেয়ে সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যস্ত। নামাজঘরের ওপরে স্থাপিত হয়েছে আমলকী শীর্ষদণ্ড শোভিত গম্বুজ। গম্বুজ নির্মাণে আগের মতো ক্রমপ্রলম্বন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।

অলংকরণের ক্ষেত্রে এই মসজিদের খিলান পর্দা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারতে তিন খাঁজবিশিষ্ট খিলানের প্রথম ব্যবহার এখাইে লক্ষ্য করা যায়। খিলানগুলো আরব্য ও জ্যামিতিক নকশায় আলংকৃত। মসজিদের মেহরাবের ডিজাইনও মানুষকে আকর্ষণ করে। সাদা মার্বেল পাথরের এই মেহরাব নসখ লিপি এবং লতাগুল্মের খোদিত নকশা দ্বারা বিশেষভাবে অলংকৃত। খাঁজ খিলানের ব্যবহারও মেহরাবটির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এক কথায় বলতে গেলে আড়হাই দিনকা ঝোপড়া মসজিদ ভারতে মুসলিম স্থাপত্য বিকাশের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।

Al Amin Hussain

Hello friend, I am (Al Amin Hussain) I am the owner of [Silent Force Team], Unauthorized use of content on this site is illegal, Do not upload site content without my permission. Thanks everyone

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button