আল্লাহর সাহায্য পায় যারা
মানুষ যখন আল্লাহর বিধান মেনে চলবে, আল্লাহর প্রিয় হবে, তখন আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন। সব বিপদাপদে আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জেনে রেখো, যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনোই তোমার উপকার করতে পারবে না। আর যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনোই তোমার ক্ষতি করতে পারবে না।
কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং কাগজ শুকিয়ে গেছে। ’ (তিরমিজি)
কোরআন ও হাদিস পাঠে জানা যায়, আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসুল ও মুমিন বান্দাদের সঙ্গে থাকেন। মুমিনদের বিপদে সাহায্য করেন। আগলে রাখেন। তাদের মনে প্রশান্তি দান করেন। যেসব মুমিন বান্দাদের তিনি সাহায্য করেন, এখানে তাদের সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো—
১. আল্লাহভীরু ও দয়াশীল মানুষ : আল্লাহ তাআলা মুত্তাকি ও দয়াশীল মানুষের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন, যারা আল্লাহভীরু ও অনুগ্রহকারী। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১২৮)
২. আল্লাহর পথে আহ্বানকারী : যারা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে আল্লাহ তাআলা তাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লাহর মহান দুই নবী মুসা ও হারুন (আ.)-কে ফিরাউনের কাছে দ্বীনি দাওয়াত নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, আমি শুনি ও দেখি। ’ (সুরা ত্ব-হা, আয়াত : ৪৬)
৩. বিপদগ্রস্ত মুমিন : যখন কোনো মুমিন বিপদগ্রস্ত হয় এবং তারা আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, আল্লাহ সাহায্যের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে থাকেন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন দুই দল পরস্পরকে দেখল, মুসার অনুসারীরা বলল, নিশ্চয়ই আমরা ধরা পড়ে যাব। মুসা বলল, কখনোই না। নিশ্চয়ই আমার প্রভু আমার সঙ্গে আছেন। তিনি আমাকে পথ দেখাবেন। ’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ৬২)
৪. আল্লাহর পথে হিজরতকারী : আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করছিলেন, তখন আবু বকর (রা.) শত্রুর হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কার সময় সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা গুহায় ছিল, তখন সে তার সঙ্গীকে বলেছিল, বিষণ্ন হয়ো না। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৪০)
৫. ধৈর্যশীল ব্যক্তি : যারা দ্বিনের ওপর চলতে গিয়ে বিপদের শিকার হয় এবং ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৩)
৭. সাহায্যকারী : নিজের জীবনে আল্লাহ তাআলার সাহায্য পাওয়ার একটি সহজ উপায় হলো, অন্যকে সাহায্য করা। মানুষকে সহযোগিতা করলে নিজের কাজেও আল্লাহ তাআলার সাহায্য পাওয়া যায়। এটা অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এর ফজিলতও অনেক। বিভিন্ন হাদিসে রাসুল (সা.) মানুষকে সাহায্য করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এক বিখ্যাত হাদিসে এসেছে, ‘বান্দা যখন তার ভাইয়ের সাহায্যে নিরত থাকে, আল্লাহও তার সাহায্যে থাকেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)
আল্লাহ তাআলার সাহায্য ছাড়া মানব জীবন অচল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বান্দা আল্লাহ তাআলার সাহায্যের মুখাপেক্ষী। তিনি সাহায্য না করলে মানুষের পক্ষে কোনো কাজ করাই সম্ভব নয়। এ জন্য সর্বদা তাঁরই কাছে সাহায্য কামনা করা বান্দার কর্তব্য। তাই বান্দা প্রতি নামাজে, প্রতি রাকাতে বলে, ‘আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই। ’ (সুরা ফাতিহা, আয়াত : ০৪)