ডাচদেরও সমীহ করছেন সাকিবরা
তাসমানিয়া সাগরের কোলঘেঁষা শহর হোবার্ট। অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ায় এখানকার সবকিছুই অন্যরকম। এই যেমন অস্ট্রেলিয়ায় গ্রীষ্মের শুরু হলেও হোবার্টে এখনো হাঁড়কাপানো শীত। এখানকার অপ্রত্যাশিত আবহাওয়া যেন বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের হাইলাইটস। কখন বৃষ্টি হবে আর কখন রোদ—তা বলা মুশকিল। টি—টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের অবস্থাও তো তাই।
বাংলাদেশকে এমনটি বলার কারণ সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। এক বছরের ব্যবধানে ২০ ওভারের সংস্করণের আরেকটি বিশ্বকাপে মাঠে নামতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসানরা। অথচ ক্রিকেটার, ম্যানেজমেন্ট কিংবা সমর্থক কারও মাঝেই স্বস্তি নেই। অস্বস্তির মাঝেও সবকিছু ছাপিয়ে আজ সকাল ১০টায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি হতে পারে অন্যরকম শুরু।
টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগের সাত আসরে মূলপর্বে বাংলাদেশের জয় একটি। সেটা ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর একের পর এক আসরে বাড়ছে হতাশা। এবার সুপার টুয়েলভের গ্রুপ ২—এ নিজেদের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকা দুটি দলকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে ২০ ওভারের সংস্করণ বলেই কি না কাউকে সহজ প্রতিপক্ষ মানতে নারাজ টাইগাররা।
চার—ছক্কার সংস্করণ বলা হয় টি—টোয়েন্টিকে। কিন্তু চার—ছক্কায় সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দলটিই বাংলাদেশ। এশিয়া কাপ থেকে নিউজিল্যান্ড সফর—ছয় ম্যাচে একটিও জেতেনি তারা। এমন পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের পক্ষে বাজি ধরার সাহস করবেন কয়জন? উত্তর হতে পারে শতকরা দু—একজন জন। খুব আত্মবিশ্বাস না থাকলে তারাও হয়তো সে দুঃসাহস দেখাতে চাইবে না।
এত নেতিবাচক বিষয় পেছনে ফেলতে পারে একটি জয়। ডাচদের হারাতে পারলেই বদলে যেতে পারে দলের ছবিটাও। ম্যাচের আগে অনুশীলনে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। হোবার্টে পরশু বৃষ্টির কারণে অনুশীলন করা হয়নি। গতকাল সেটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন লিটন দাস, সৌম্য সরকাররা। আজ একাদশে দুজনকেই দেখা যেতে পারে। তবে ওপেনিংয়ে কাকে দেখা যাবে—এ নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব।
২০১০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত হোবার্টে টি—টোয়েন্টি হয়েছে মোটে ১০টি। এর মধ্যে ৭টিই হয়েছে চলমান টুর্নামেন্টে। টানা ৭ ম্যাচ হওয়ায় উইকেট স্পিনবান্ধব হতে পারে। শেষ কয়েকটি ম্যাচে সেটাই দেখা গিয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে টাইগারদের পরিকল্পনা কী হবে, সে সিদ্ধান্ত সকালে উইকেট দেখেই নিতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।
বাংলাদেশের অস্বস্তির মাঝে স্বস্তিতে ডাচরা। প্রাথমিক পর্বে দুই ম্যাচ জিতে আসাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ডাচ অলরাউন্ডার টম কুপার। অতীত স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে হারাতে পারলে অঘটন হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল ম্যাচপূর্বক সংবাদ সম্মেলনে কুপার বলেছেন, ‘আপনারা বলছেন বাংলাদেশকে হারালে হয়তো অঘটন হবে; কিন্তু আমি সেভাবে দেখছি না। আমরা এখানে লড়াই করতে এসেছি। অতীতে আমরা তাদের বিপক্ষে সমানে সমান খেলেছি। আগামীকাল (আজ) তাদের হারাতে না পারার কোনো কারণ দেখছি না।’
অতীতে তিন দেখায় দুবার জিতেছে বাংলাদেশ, একবার নেদারল্যান্ডস। এবার সেটাকে সমান করতে চাইবে ডাচরা। অন্যদিকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ সাকিবদের।