কাবিননামার সময় সিকিউরিটি বাবদ যে অর্থ ইদানীং চাওয়া হয় সেটা এক ধরনের ব্ল্যাকমেইলিং বলে মন্তব্য করেছেন গায়ইক আসিফ আকবর। সম্প্রতি নিজের ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন তিনি। যার ফলে তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে প্রশ্ন আসায় এমন মত প্রকাশ করলেন ও প্রিয়া তুমি কোথায় খ্যাত কণ্ঠশিল্পী।
আসিফ বলেন, নিজের যৌবনের জাগরণ উঠেছে আমার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে।
প্রশ্নও এসেছে ইয়াং জেনারেশনের পক্ষ থেকে। আমাদের সামাজিকতায় এমনিতেই নানা প্রতিবন্ধকতা। প্রথম প্রশ্ন থাকে ছেলে ইনকাম করে কি না! ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও একটা ফ্যাক্টর। যে মেয়েটা প্রাপ্তবয়স্ক তাঁর মতামতও জড়িয়ে থাকে সেইম ফালতু প্রশ্নে। সমাজের অপ্রয়োজনীয় হিসাবে জীবন চলে এখানে। শরিয়ত মোতাবেক বিয়ের পদ্ধতি আদৌ মানা হয় কি না জানি না, তবে কাবিননামার ক্যারিকেচারে উসুলের প্রেশারটা পাত্র নামের বিবাহ-উন্মুখ ছেলেটাকে হতাশ করবেই। জিতে যেতে পারলে মঙ্গল, সমস্যা হলো সবাই জিততে পারে না।
কাবিননামার অর্থ প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, কাবিননামার সময় সিকিউরিটি বাবদ যে অর্থ ইদানীং চাওয়া হয় সেটা এক ধরনের ব্ল্যাকমেইলিং। একটা বিয়ের যোগ্য যুবক এই প্রেশারে পুরুষ হওয়ার আগেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠা অবশ্যই কিছুটা অবান্তর। বিয়ে মানেই একটা অনন্ত জীবনের হিসাব, সেখানে শর্ত এলে তো বন্ধনের আসল সংযোগ পিছিয়ে যাবে। এটা অন্যায়, রাষ্ট্রের উচিত ম্যারেজ লোনটাকে সরল সুদের কিস্তিতে ফেলে দেওয়া। নিশ্চিত করতে হবে সংসার করার অধিকার। আরো একটা ঝামেলা আছে নারী নির্যাতন টাইটেলে। কোনো কারণে ঝামেলা হলেই ছেলেটাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার লাইন আদালত পর্যন্ত প্রায়ই যায়, জামিনবিহীন ভয়ঙ্কর মামলা।
সমাজের অসম চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করতে হবে জানিয়ে জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী বলেন, অপরাধ বিবেচনায় প্রমাণের আগেই একটা ছেলে অসহায় হয়ে পড়ে। সব ছেলে ফেরেশতা হবে না, এটা মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই। সমাজের অসম চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করতে হবেই। এত শর্তের বেড়াজালে দীর্ঘ বৈবাহিক জীবন মেইনটেইন করা প্রতিটি পুরুষের জন্য একধরনের মানসিক টর্চার। খোরপোশ কিংবা মেয়েদের লাইফের সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে গিয়ে এ দেশে আসলে পুরুষ নির্যাতনের অটো শাস্তিযজ্ঞ চলছে।
ভালোবাসার জায়গায় হিসাব-নিকাশ খুঁজতে মানা করলেন এই গায়ক। বললেন, নারী-পুরুষের সাংসারিক সমঝোতা জরুরি। বিয়ে করতে চাওয়া ছেলেটাকে বাংলাদেশের সংবিধান না বুঝিয়ে স্বস্তি দেওয়া প্রয়োজন। কিছু বাই ডিফল্ট পুরুষ ছাড়া সবাই সংসার করে বাবা হতে চায়। মন নরম করুন, অনাগত সুন্দর জীবন নামের ফুলগুলো ফুটতে দিন। আমি শিওর, বিয়ের মাধ্যমে শাশ্বত সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। লেনদেন শুধু ঝামেলাই সৃষ্টি করে, অনন্ত ভালোবাসার জায়গায় হিসাব-নিকাশ ঢুকে যায়। চাপ সৃষ্টি আর নয়, ভালোবাসা খুঁজুন। আমার পরিবারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক বেগম সালমা আসিফ নিজেই একজন অনন্য উদাহরণ। যিনি আমার সারা জীবনের হিস্যা, তাঁর সঙ্গে লেনদেন বড্ড বেমানান।
গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আসিফ আকবরের ছেলে শাফকাত আসিফ রণ ও ইসমত শেহরীন ঈশিতার বিয়ে সম্পন্ন হয়।